আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রিয় দর্শক! আমরা সবাই জানি, ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের ধারণা একটি সাম্প্রতিক আবিষ্কার বা মহাকাশ বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার। উনিশ শতকে যা সূচনা হয়েছে মাত্র। কিন্তু পবিত্র আল-কুরআনে এরও হাজারের বেশি বছর আগে বর্ণনা করা হয়েছে এর ইঙ্গিত! কী আশ্চর্য! কী করে সম্ভব হলো এমন ইঙ্গিত প্রদান করা বা এমন তথ্যের আভাস দেওয়া?! আজ আমরা এ বিষয়ে আল-কুরআন, তাফসীর এবং আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করবো, ইনশা আল্লাহ।
- ব্ল্যাকহোলের ধারণা :
প্রিয় দর্শক! মহাবিশ্বের অসীম বিস্তৃতিতে আবিষ্কৃত এক বিষ্ময়কর নাম ‘‘ব্ল্যাকহোল’’। যাকে বাংলায় বলা হয়- কৃষ্ণগহ্বর। যে নামেই ডাকা হোক না কেন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্য দিয়েই এটির আসল পরিচয় ফুটে ওঠে। আল-কুরআনে সরাসরি এটির নাম উল্লেখ করা হয়নি বটে। কিন্তু স্বয়ং স্রষ্টা মহান আল্লাহ তাঁর কিতাবে এমন একটি বিশেষ সৃষ্টি সম্পর্কে শপৎ করেছেন এবং এমন কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথা ব্যক্ত করেছেন যার সাথে ‘‘ব্ল্যাকহোল’’ এর বৈশিষ্ট্যের মিল দেখলে সত্যিই বিস্মিত হতে হয়।
এ পর্যন্ত মহাকাশ বিজ্ঞানের গবেষণায় যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে সংক্ষেপে তা হলো :
- যে সব তারকার ভর সৌর-ভরের ৮ গুণের কম থাকে, অন্তিম দশায় সেইসব সংকোচনশীল তারকার কেন্দ্রের ভর চন্দ্রশেখরের সীমা অর্থাৎ ১.৪ গুন সৌর-ভরের নিচে থাকে এবং সেগুলো ‘‘শ্বেতবামন’’ হিসেবে স্থতি লাভ করে।
- যে সব তারকার ভর সৌর-ভরের ৮ গুণের বেশি থাকে, অন্তিমদশায় সেগুলো সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হতে পারে।
- যেসব সুপারনোভার সংকোচনশীল কেন্দ্রের ভর চন্দ্রশেখর সীমার উপরে কিন্তু ১.৪ থেকে ৩ গুণ সৌর-ভরের মধ্যে থাকে সেগুলো ‘‘নিউট্রনো’’ তারায় পরিণত হতে পারে।
- কিন্তু এগুলোর ভর যদি ৩ গুণ সৌর-ভর অপেক্ষা বেশি হয় তবে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা এবং সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্তপ্রায় ‘‘ব্ল্যাকেহালে’’ পরিণত হয়।
স্টিফেন হকিং এর লেখা ‘‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’’, ‘‘কৃষ্ণগহ্বর এবং শিশুমহাবিশ্ব’’ ও অন্যান্য রচনা থেকে সংগৃহিত তথ্য অনুসারে- সূর্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন বেশি ভরসম্পন্ন কোন তারকা কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিস্ফোরিত হয়ে যথেষ্ট পরিমাণ পদার্থ নিক্ষেপ করার ফলে নিজের ভর এর চেয়ে নিচে নামিয়ে আনতে পারে।
কিন্তু সব সময় এরকম ঘটে না। কোনও কোনও তারকা অতি ক্ষুদ্র হয়ে যায়। ফলে তাদের মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রগুলো আলোককে বাঁকিয়ে সেই তারকাতেই আবার ফিরিয়ে আনে, কোনও আলোক বা কোনও কিছুই সেখান থেকে পালাতে পারে না। এই তারকাগুলো ‘‘কৃষ্ণগহ্বরে’’ রূপান্তরিত হয়।
কৃষ্ণগহ্বর থেকে কণিকা উৎসর্জন হলে এর ভর ও আকার স্থির হারে হ্রাস পায়। ফলে আরও অধিক সংখ্যক কণিকার ছিদ্রপথে নির্গমন সহজ হয় এবং ক্রমবর্ধমান হারে চলতে থাকে, যতক্ষণ না কৃষ্ণগহ্বরটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়। শেষ পর্যন্ত মহাবিশ্বের সমস্ত কৃষ্ণগহ্বরই এভাবে উবে যায়। এই মহাবিশ্বে হয়ত বেশ কিছু সংখ্যক অধিকতর ক্ষুদ্র কৃষ্ণগহ্বর ছড়িয়ে আছে যেগুলো তারকা চুপসে গিয়ে সৃষ্টি হয়নি। এগুলো সৃষ্টি হয়েছে উত্তপ্ত ঘন মাধ্যমের অত্যন্ত উচ্চ চাপগ্রস্ত অঞ্চল চুপসে যাওয়াতে।
কোয়ান্টাম ক্রিয়া সাপেক্ষে এই “আদিম কৃষ্ণগহ্বর” গুলোর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কোন তারকা কৃষ্ণগহ্বরের খুব কাছাকাছি এলে তার নিকটতর ও দূরতর অংশে মহাকর্ষীয় আকর্ষণের পার্থক্যের জন্য তারকাটি ছিন্ন হয়ে যায়। এর অবশিষ্টাংশ এবং অন্যান্য তারকা থেকে যে সমস্ত বায়বীয় পদার্থ নির্গত হয় সবই গিয়ে পড়ে ঐ কৃষ্ণগহ্বরে। কৃষ্ণগহ্বর থেকে যা বেরিয়ে আসে সেটি কিন্তু সেখানে যা পড়ে তার থেকে পৃথক। শুধুমাত্র শক্তিটা একরূপ থাকে। কৃষ্ণগহ্বর থেকে কণিকা এবং বিকিরণ নির্গত হলে এর ভর হ্রাস পায়।
ফলে এটি আরও ক্ষুদ্রতর হয় এবং কণিকাগুলো দ্রুততর গতিতে বাহিরে প্রেরিত হয়। শেষ পর্যন্ত এর ভর শুন্যে পরিণত হয়ে কৃষ্ণগহ্বরটি সম্পূর্ণ মিলিয়ে যায়। যে বস্তুগুলো কৃষ্ণগহ্বরের ভিতরে পড়ে সেগুলো তাদের নিজস্ব ক্ষুদ্র একটি শিশু-মহাবিশ্বে চলে যায়।
- আল-কুরআনে ব্ল্যাকহোলের ইঙ্গিত :
প্রথমত পবিত্র আল-কুরআনের সূরা ওয়াকিয়ার ৭৫ ও ৭৬ নং আয়াত আল্লাহ তায়ালা বলেন :
فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُومِ . وَإِنَّهُ لَقَسَمٌ لَّوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ .
‘অতএব, আমি তারকারাজি পতিত হওয়ার স্থানের শপথ করছি। নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ- যদি তোমরা জানতে!’ [সূরা ওয়াকিয়া, ৫৬: ৭৫ ও ৭৬]
- এ আয়াতে যে ‘‘মাওয়াকিউন (مَوَاقِع)’’ শব্দটি রয়েছে এর আভিধানিক অর্থ হলো : place fallen down- পতিত হওয়ার স্থান। সুতরাং, ‘‘মাওয়াকিউন নজূম’’ এর অর্থ হবে- the place where the stars are fallen down- তারকারাজি পতিত হওয়ার স্থান।
- দ্বিতীয়ত সূরা তাকভীরের ১৫ ও ১৬ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা শপথ করে বলেন :
فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ .الْجَوَارِ الْكُنَّسِ.
‘শপথ! সে সব তারকার যেগুলো পশ্চাতে চলে যায় বা গোপন হয়ে যায় এবং অদৃশ্য হয়ে প্রত্যাগমণ করে।’ [সূরা তাকভীর, ৮১: ১৫ ও ১৬]
এখানে ‘‘খুন্নাস (الْخُنَّس)’’ অর্থ হলো : the hiding stars- যে সব তারকা গোপন হয়ে যায়। আর ‘‘আল-জাওয়ারিল কুন্নাস (الْجَوَارِ الْكُنَّس)’’ অর্থ হলো : Which become invisible and then coming back- যা অদৃশ্য হয়ে প্রত্যাগমণ করে।
- আয়াত ও বৈজ্ঞনিক তথ্যের সমন্বয় :
প্রিয় দর্শক! আমরা শুরুতে জেনেছি- কোন তারকা কৃষ্ণগহ্বরের খুব কাছাকাছি এলে তার নিকটতর ও দূরতর অংশে মহাকর্ষীয় আকর্ষণের পার্থক্যের জন্য তারকাটি ছিন্ন হয়ে যায়। এর অবশিষ্টাংশ এবং অন্যান্য তারকা থেকে যে সমস্ত বায়বীয় পদার্থ নির্গত হয় সবই গিয়ে পড়ে ঐ কৃষ্ণগহ্বরে।
- সুতরাং, বলা যায়- সূরা ওয়াকিয়ার ৭৫ নং আয়াতে নক্ষত্রসমূহের পতিত হওয়ার স্থান বলতে ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর এর ইঙ্গিত রয়েছে।
- এরপর ৭৬ নং আয়াতে যেহেতু কৃষ্ণগহ্বরের বৈশিষ্ট্যধারী স্থান অর্থাৎ নক্ষত্রসমূহের পতিত হওয়ার স্থানকে নিয়ে মহাশপথ করা হয়েছে। সুতরাং, বলা যায়- ‘‘আদিম কৃষ্ণগহবরগুলো’’ অল্লাহ তায়ালার আদেশে অনেক আগেই সৃষ্টি হয়ে গেছে।
আর সূরা তাকভীরের ১৫ নং আয়াতে প্রদত্ত বক্তব্যে ‘‘খুন্নাস’’ তথা যেসব তারকা গোপন হয়ে যায় বলে সম্ভবত দু’টি বিষয়ের প্রতি ইংগিত দেয়া হয়েছে :
- প্রথমত কোন নক্ষত্র যখন (নব) কৃষ্ণগহ্বরে রূপান্তরিত হয় তখন তা থেকে বিপরীত কনিকা উৎসর্জনের ফলে এর ভর হ্রাস পায় এবং অত্যন্ত সংকুচিত হয়ে ক্ষুদ্রতর অবস্থায় বিরাজ করে। অর্থাৎ আমাদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যায় বা গোপন হয়ে যায়।
- দ্বিতীয়ত কোন নক্ষত্র কৃষ্ণগহ্বরের আওতায় এলে তা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং এর সমূদয় পদার্থ সহ নক্ষত্রটি কৃষ্ণগহ্বরে পতিত হয়। ফলে এটিও দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়। অর্থাৎ গোপন হয়ে যায়।
এরপর ১৬ নং আয়াতে সম্ভবত এ ইংগিত দেয়া হয়েছে যে, যেহেতু কৃষ্ণগহ্বর থেকে কণিকা নির্গমনের ফলে অবশেষে এর ভর শুন্য হয়ে যায় অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণরূপে মিলিয়ে যায় বা এর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়।
- সুতরাং সূর্যের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি ভরসম্পন্ন যে নক্ষত্র কৃষ্ণগহবরে রূপান্তরিত হয় এবং যে নক্ষত্র কৃষ্ণগহবরে পতিত হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়- এরা উভয়েই অবশেষে অদৃশ্য শক্তিরূপে মহাবিশ্বের কোন অজ্ঞাত অঞ্চলে তথা শিশু-মহাবিশ্বে প্রত্যাগমণ করে (to return back)।
আসলে, যে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে মহাকাশে ব্ল্যাকহোলের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা যায় তা হলো এটির প্রচন্ডতম ধ্বংসাত্মক আকর্ষণ ক্ষমতা। কারণ এগুলো এতই সংকুচিত হয়ে ক্ষুদ্রতর অবস্থায় থাকে যে, এদের অবস্থান নির্ণয় করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে এদের প্রচন্ডতম আকর্ষণ ক্ষমতার আওতায় আসা ধ্বংসপ্রাপ্ত নক্ষত্রগুলোর ছিন্ন ভিন্ন দশা ও পতন প্রবাহ দেখে পতনমুখি স্থানে আকর্ষণকারী কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি নির্ণয় করা সহজ হয়। আল-কুরআনে এই তথ্যও বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন: সূরা নাযিয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন :
وَالنَّازِعَاتِ غَرْقًا . وَالنَّاشِطَاتِ نَشْطًا . وَالسَّابِحَاتِ سَبْحًا.
‘শপথ তাদের, যারা নির্মমভাবে উৎপাটন করে বা পদচ্যুত করে বা নামিয়ে আনে, যারা বাঁধন খুলে বন্ধন মুক্ত করে দেয় এবং সন্তরণকারী তারকাসমূহের।’ [সূরা নাযিয়াত, ৭৯: ১, ২ ও ৩]
অর্থাৎ পূর্বে নক্ষত্রসমূহ পতিত হওয়ার স্থান হিসেবে যে স্থানের ইংগিত দেয়া হয়েছিল এবার সূরা নাযিয়াতের ১ম ও ২য় আয়াতে এসে সেই স্থানের প্রকৃতি অর্থাৎ তা চিনবার উপায় সম্পর্কে ইংগিত দেয়া হলো। আয়াত দু’টিতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর এমন ধরনের বিশেষ সৃষ্টি নিয়ে শপথ করেছেন যার সাথে ব্ল্যাকহোলের প্রচন্ড শক্তি ও ধ্বংসাত্মক প্রকৃতির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ব্ল্যাকহোল বিশালকার কোন নক্ষত্র সহ গ্রহ, উপগ্রহ ইত্যাদি সব কিছুকে তাদের আওতায় পেলে প্রচন্ড আকর্ষণে টেনে নিয়ে গতানুগতিক কক্ষপথের বাঁধন থেকে মুক্ত করে দেয়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কক্ষপথ থেকে পদচ্যুত বা উৎপাটন করে নির্মমভাবে নামিয়ে আনে।
- এর ফলে অবশেষে সেগুলো সূরা ওয়াকিয়ার আয়াতে বর্ণিত নক্ষত্রসমূহের পতিত হওয়ার স্থানে পতিত হয়। যাকে ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর বলা যায়।
এখন ৩ নং আয়াতের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়- এখানে সন্তরনকারী তারকাসমূহের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে। বিজ্ঞানের বর্ননায় আমরা দেখেছি- তারকাগুলোই পরবর্তীতে কৃষ্ণগহ্বরে রূপান্তরিত হয়।
- সুতরাং, বলা যায়- এ আয়াতে বিশেষ কিছু তারকার দিকে নির্দেশ করা হয়েছে।
প্রিয় দর্শক! পূর্বে ভাবা হত যে, ব্ল্যাকহোল থেকে কোন কিছু- এমনকি আলোকও বেরিয়ে আসতে পারে না। আর এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে এগুলোর নাম দেয়া হয় ব্ল্যাকহোল। অর্থাৎ অন্ধকার গহ্বর বা কৃষ্ণগহ্বর। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, কৃষ্ণগহ্বরগুলোকে যত কৃষ্ণবর্ণ বলে প্রচার করা হয় আসলে গহ্বরগুলো তত কৃষ্ণ নয়।
কারণ, কণাবাদী বলবিদ্যার অনিশ্চয়তার নীতি অনুসারে, একটি কণিকা যদি কৃষ্ণগহ্বরে থাকে তাহলে এর দ্রুতি আলোকের দ্রুতির চেয়ে বেশি হওয়া সম্ভব। এর ফলে অনেক বেশি সময় লাগলেও পরিনামে কণিকাটি কৃষ্ণগহ্বর থেকে পলায়ন করতে পারবে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো বিজ্ঞানের দেয়া নাম ‘‘ব্ল্যাকহোল’’ সম্পর্কে ১৪৫০ বছর পূর্বে আল-কুরআনে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হলেও এই ‘‘ব্ল্যাক’’ অর্থাৎ কৃষ্ণ বৈশিষ্ট্যটির বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। কারণ ব্ল্যাকহোলের স্রষ্টা সর্বজ্ঞ মহান অল্লাহ ভালভাবেই জানেন যে, ব্ল্যাকহোল প্রকৃত অর্থে ব্ল্যাক বা কৃষ্ণ নয়।
আসলে, পবিত্র কুরআনে এমন কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য নেই যা ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে কিছুদিন পূর্বেও মানুষ যে সমস্ত তথ্য সম্পর্কে বিভ্রান্তিতে ছিল, জ্ঞান সাধনার ফলে তার অনেকটাই আজ সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে।
এভাবে অল্লাহ তায়ালা বার বার প্রমাণ করে দেখান- আল-কুরআনে প্রদত্ত বৈজ্ঞানিক ঐশী তথ্যগুলো যেমন সত্য, ঐশী আইন-কানুনগুলোও তেমনই অকাট্য ও সত্য এবং সর্বকালেই কল্যাণকর। মহান স্রষ্টা চান, বিশ্বাসী মানুষেরা যেন এইসব ঐশী তথ্য সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণার মধ্য দিয়ে আধুনিক আবিষ্কারগুলোকে যাচাই করে নিয়ে প্রকৃত সত্যের সন্ধান লাভ করতে পারে এবং আল্লাহর মহত্ব ও করুণার কথা স্মরণ করার সাথে সাথে একমাত্র তাঁরই কাছে মাথা নত করে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে তাঁর সামনে মাথা নত করার তাওফিক দান করুন, আমীন!