1. islamandlifestudio@gmail.com : islamandlife :
  2. saif17rfl@gmail.com : Muhammad Saifullah : Muhammad Saifullah
মহাবিশ্বের আয়তন কত? বিজ্ঞান কি তা আবিষ্কর করতে পেরেছে? এ ব্যাপারে আল-কুরআন কি বলে? - Islam and Life
বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৭:০১ অপরাহ্ন

মহাবিশ্বের আয়তন কত? বিজ্ঞান কি তা আবিষ্কর করতে পেরেছে? এ ব্যাপারে আল-কুরআন কি বলে?

মুহাঃ উবায়দুল্লাহ
  • Update Time : শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩

আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতুহু।

মহান আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টি আমাদের এই পৃথিবী কতই না সুন্দর,পরিপাটি এবং সবকিছু যেন কতই না সু-পরিমিত। প্রকৃতির সবকিছুর মধ্যে কত সুন্দর সিস্টেম সেটাপ করা আছে। প্রকৃতির রূপ ও জীব বৈচিত্র এবং তাদের জীবন ধারণের মধ্যে রয়েছে একটি সুনিপুণ প্ল্যান ও ডিরেকশন। যাকে বলা হয় ইকো সিস্টেম। তাই পৃথিবীর চতুর্দিকের যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখতে পাই অনাবিল সৌন্দর্য্য! পাহাড়, নদী, বন, সমুদ্র সবকিছুর সমন্বয়ে যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই দেখতে পাই সুন্দর আর নেয়ামতের অফুরান ভান্ডার। এ যেন শেষ হতেই চায় না! কারণ এই পৃথিবী এত বিশাল, এত বিশাল যে আপনি আপনার এই জীবনের সমস্ত সময় ব্যয় করেও এই পৃথিবীর সব সৌন্দর্য্য দেখে শেষ করতে পারবেন না। আর ২০২৩সালের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী আমাদের পৃথিবীর মোট আয়তন হচ্ছে ৫১ কোটি ৯৮হাজার ৫২০বর্গ কিলোমিটার। আর এরমধ্যে ৩৬কোটি ১১লক্ষ ৪৮হাজার ২০০বর্গ কিলোমিটার হচ্ছে জলভাগ অর্থ্যাৎ পৃথিবীর মোট আয়তনের প্রায় ৭১ভাইগ সাগর-মহাসাগর বা পানি আর পানি, এবং মাত্র ১৪কোটি ৮৯লক্ষ ৫০হাজার ৩২০বর্গ কিলোমিটার হচ্ছে স্থলভ‚মি। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে, যদি আমাদের পৃথিবীই এত বিশাল হয় তাহলে এই মহাবিশ্ব কত বড় বা মহাবিশ্বের আয়তন কত?

আর এই মহবিশ্বের ¯্রষ্টা মহান আল্লাহ তায়ালাই বা মহাবিশ্বের বিশালতার ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে কি বলেছেন সেটাই আজকে আমরা জানতে চলেছি। আজকের আলোচ্য বিষয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং চমকপ্রদ হতে যাচ্ছে। এই ছবিটির দিকে দেখুন। কেউ কি বুঝতে বা চিনতে পেরেছেন? এই ছবিটির নাম ‘ভয়েজার ওয়ান পেইল । পৃথীবির বাইরে সবচেয়ে দূরবর্তী স্থান থেকে পৃথিবীর প্রকৃত ফটোগ্রাফ বা তোলা ছবি। পৃথিবী থেকে ৬০০ কোটি বা ৬বিলিয়ন কিলোমিটার দূর থেকে তোলা পৃথিবীরই একদম রিয়েল ছবি। এখন অনেকেই বলতে পারেন পৃথীবির বাইরে মানুষের দৌড় মাত্র চাঁদ পর্যন্ত বা পৃথীবির বাইরে মাত্র ৩ লক্ষ ৮৪হাজার চারশ কিলোমিটার পর্যন্ত মানুষ যেতে পেরেছে, তাহলে ৬০০ কোটি কিলোমিটর দূরে গিয়ে পৃথীবির প্রকৃত ছবি কে তুলেছে? ভয়েজার-১!(উচ্চারণ হবে ভয়েজার ওয়ান), হ্যাঁ এই ছবি তুলেছে ভয়েজার-১, ভয়েজার-১ এর মহাবিশ্বের অনন্ত যাত্রায় ৬০০কোটি কিলোমিটার দূরে যাওয়ার পর নাসার বিজ্ঞানীরা ভয়েজার-১এর ক্যামেরা পৃথিবীর দিকে ঘুরিয়ে দেন এবং এই ঐতিহাসিক এই ছবিটি তুলেন যেখানে পৃথিবীকে দেখা যাকে যাচ্ছে কলমের নিবের চেয়েও ক্ষুদ্র একটি অস্পষ্ট বস্তুর মতো। শুধুমাত্র এই ছবিটিরি দিকে তাকালেই অনুধাবন করা যায় মহাবিশ্বের তুলনায় আমাদের এই বিশাল পৃথিবী কতটা ক্ষুদ্র বা নগণ্য। তবে বলে রাখা আবশ্যক যে এই ছবিটি তোলার সময় ভয়েজার-১ আমাদের সৌরজগতের ভেতরেই ছিল! যে ছবিটিতে আমাদের পৃথিবীকে একটি পিক্সেলের চাইতেও ক্ষুদ্র দেখা যাচ্ছে। তাহলে আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি পুরো মহাবিশ্ব তো অনেক দূরের কথা শুধুমাত্র আমাদের সৌরজগতের তুলনায়ই আমাদের পৃথিবী একটি সরিষা দানার চেয়েও অনেক ক্ষুদ্র ও নগণ্য। তাহলে আমাদের এই মহাবিশ্ব কত বড়? তো আসুন এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আমরা মহাবিশ্বের অতলে দৃষ্টি রাখার চেষ্টা করি স্টেপ বাই স্টেপ। আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী আমাদের সৌরজগতের একটি সদস্য গ্রহ। আর আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রে রয়েছে সূর্য। অর্থ্যাৎ আমাদের সূর্য নামের নক্ষত্রের রয়েছে একটি সৌর পরিবার এবং সেটিই আমাদের সৌরজগত। আমাদের সুন্দর আবাসভূমি এই পৃথিবীসহ সূর্যকে প্রদক্ষিণরত ৯টি গ্রহ এবং সৌরজগতের মাঝখানে এস্টরয়েড বেল্ট নামের বিশাল পাথর রাজ্য এবং আমাদের সৌরজগতের একদম শেষের গ্রহ প্লুটোর পরে সৌর জগতের চতুর্দিকে বিস্তৃত বিশাল কাইপার বেল্ট নামের আরেকটি পাথর রাজ্য বা পাথরের বেল্ট এই সৌরজগতের সদস্য বা আমাদের নক্ষত্র সূর্যের অনুগত সদস্য। তাহলে ভয়েজার-১ এর ছবিতে আমাদের পৃথিবীকে নিঃসঙ্গ একাকী ক্ষুদ্র দেখালেও আমাদের পৃথিবী আসলে একা নয়, মোটামুটি তার রয়েছে একটি পরিবার যে পরিবারের কর্তা হলো সূর্য। তাহলে দেখা গেলো গ্রহগুলো নিজ নিজ স্থান অনুপাতে একা থাকলেও আসলে তারা এক নয়, তারা একটি পরিবারের সদস্যদের মতোই একটি নক্ষত্রের আয়ত্বাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে এবং তাদের নিয়ন্ত্রক নক্ষত্র তাদের সবার কর্তার ভ‚মিকা পালন করে। তাহলে বোঝাগেলো মহাবিশ্বের বস্তু সম্ভারের সবচেয়ে ক্ষুদ্র গুচ্ছ হলো একটি সৌরজগত যেটি কি না একটি নক্ষত্র ও তার আয়ত্বাধীন কিছু গ্রহের একটি সংগঠন। তবে এই মহাবিশ্বের তুলনায় সংগঠনটি অতি ক্ষুদ্র হলেও আমাদের দৃষ্টি ও আমাদের পৃথিবীর আয়তনের তুলনায় অকল্পনীয় বিশাল! যেমন আমাদের সৌরজগতের সর্বশেষ গ্রহ প্লুটোর দূরত্ব সূর্য হতে ৫৯০কোটি ৬৩লাখ ৮০ হাজার কিলোমিটার এবং পৃথিবী হতে দূরত্ব ৫৭৫কোটি ৫৯লাখ ৮০হাজার কিলোমিটারএবং সৌরজগতের বিশালতা যেকতটা বিশাল তা‘ভয়েজার ওয়ান পেইল বøু ডট’ছবিটিতে আমাদের পৃথিবীর আকারের দিকে তাকালেই সহজেই বোঝা যায়।তাহলে এর মোদ্দা কথা হলো একটি নক্ষত্র ও তার সৌরপরিবার মিলেই একটি সৌরজগত। এরকম আরো নক্ষত্র বা সৌরজগত কি মহাবিশ্বে আরো আছে? জ্বী হ্যাঁ, মহাবিশ্বে সৌরজগত বলতে শুধু আমাদের সৌরজগতই নয়, রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন সৌরজগত বা সোলার সিস্টেম! এমনকি আপনার চোখে রাতের আকাশের চতুর্দিকে যে লক্ষ কোটি নক্ষত্র বা তারা দেখতে পান তাদের অধিকাংশেরই রয়েছে নিজস্ব সৌর ব্যবস্থা! ভাবছেন ওগুলো তো রাতের আকাশের তারা! আমাদের সূর্য আর আকাশের তারা কি এক হলো?

জ্বী হ্যাঁ! আমাদের সূর্যও রাতের লক্ষ কোটি তারাদের মতো একটি সাধারন তারা মাত্র। তফাৎটা হচ্ছে আমাদের সূর্য আমাদের অনেক নিকটবর্তী যার কারণে আমরা তাকে আকারে বিশাল, অত্যাধিক উজ্জ্বল এবং উত্তপ্ত হিসেবে দেখতে পাই। আমাদের রাতের আকাশে আমরা যে অগুণিত তারার মেলার দেখতে পাই তার মধ্যে আমাদের সূর্যের চেয়েও অনেক বড় নক্ষত্র রয়েছে। যেমন এই তারকাবন্ধনের তারা দিকে দেখুন, এটিকে বলা হয় কাল পুরুষ নক্ষত্র মন্ডল বা অরিয়ন কন্সটেলেশেন। এই অরিয়ন নক্ষত্র মন্ডলের ফ্রেমের নিচের দিকের কর্ণারে বিদ্যমান এই তারাটির নাম রিগ্যাল যাকে আবার অন্য কথায় বলা হয় বøু সুপার জায়ান্ট, কারণ এই নীল তারকাটি আকারে বিশাল, কেমন বিশাল তা চিত্রে দেখুন। রিগ্যাল আমাদের সূর্যের চাইতে ৭৯বড়। যদি আমাদের সূর্য পৃথিবীর চেয়ে তের লক্ষগুণ বড় হয় তাহলে রিগ্যাল কত বড় হবে? ১০কোটি ২৭লক্ষ গুণ বড়! আল্লাহু আকবার! তাহলে ভেবে দেখুন আমাদের এই বিশাল পৃথিবী মহাবিশ্ব তো দূরের কথা রিগ্যাল এর মত একটিনগন্য নক্ষত্রের কাছেই আমাদের প্রিয় ধরনী কতটা ক্ষুদ্র! রিগ্যাল নিজেই যেন এই পৃথিবীর তুলনায় একটি মহাবিশ্ব। অথচ দেখুন আমাদের দৃষ্টিতে ধরা পড়া বা দৃশ্যমান আকাশের তুলনায় রিগ্যাল একটি অতি ক্ষুদ্র তারা বৈ আর কিছু নয়।বিস্ময়ের এখানেই শেষ নয়!অরিয়ন নক্ষত্রমন্ডলের  ফ্রেমের এই তারাটির দিকে দেখুন। এর নাম ব্যাটেলজিউস।কিছুক্ষণ জেনেছি রিগ্যাল আমাদের সূর্যের তুলনায় ৭৯গুণ এবং পৃথিবীর চেয়ে ১০কোটি ২৭লক্ষগুণ বড়ো। কিন্তু ব্যাটেলজিউসের আকার সম্পর্কে জানলে আপনি আরো অবাক হবেন। এই ব্যাটেলজিউস আমাদের সূর্যের চেয়ে ৭৬৪গুণ বড় এবং সে হিসেবে এই দানব তারকাটি আমাদের পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৯৯৪কোটি গুণ বড়! মহাকাশের তুলনায় একটি নগন্য ক্ষুদ্র তারকাই যদি আমাদের পৃথিবীর চেয়ে প্রায় হাজার কোটি গুণ বড় হয়ে থাকে তাহলে মহাবিশ্বের আয়তন কেমন হতে পারে তা কি আমাদের মস্তিষ্কের চিন্তা শক্তি দ্বারা অনুধাবনযোগ্য?ফিরে আসি মূল টপিকস্। আমাদের ভিডিওর শিরোনাম বা আলোচ্য বিষয় হলো “মহাবিশ্বের আয়তন কত? বিজ্ঞান কি তা আবিষ্কার করতে পেরেছে? এব্যাপারে আল-কুরআন কি বলে?” সুতরাং মহাবিশ্বের আয়তন সম্পর্কে ধারণা পেতে আমাদের মহাকাশীয় বস্তু বা বস্তু সম্ভার তথা বস্তু পুঞ্জ সম্পর্কে সম্যখ ধারণা নিতে হবে স্টেপ বাই স্টেপ বা পর্যায়ক্রমে কিংবা মহাকাশীয় বস্তু সম্ভারের একান্ত ক্ষুদ্র সংঘঠন থেকে করে পর্যায় ক্রমে বৃহত্তম সংঘঠনগুলোর আয়তন সম্পর্কে ধারণা লাভের মাধ্যমে। সুতরাং আমরা জানলাম মহাজাগতিক বস্তু সমূহের সবচেয়ে ছোট সংগঠন হলো সৌরজগত বা একটি নক্ষত্রের আওয়তাধীন গ্রহ-উপগ্রহ সম্ভার বা তার সৌরপরিবার। আমার সাথে থাকুন, আপনার জন্য আরো অনেক বিস্ময় অপেক্ষা করছে। সৌরজগতের পরের বৃহত্তম মহাজাগতিক বস্তু সম্ভার হচ্ছে লোকাল নেইবারহুড বা প্রতিবেশী নক্ষত্রসমূহ। আমাদের সূর্যেরও প্রতিবেশী নক্ষত্র বা বলা যায় আত্মীয় স্বজন রয়েছে। চিত্রটির দিকে দেখুন। এখানে দেখতে পাওয়া নক্ষত্রগুলোই হলো আমাদের সূর্যের প্রতিবেশী যাদের এক কথায় বলা হয় লোকাল নেইবারহুড।জ্যোর্তিবিজ্ঞানের শুরুর দিক থেকেই কিন্তু আরব জোত্যিবিজ্ঞানীরা নক্ষত্রদের বিভিন্ন ক্যাটালগ/তালিকা বা চিত্র ইত্যাদি মেইনটেন করে আসছেন। আমাদের সূর্যের প্রতিবেশী নক্ষত্রদেরও বিভিন্ন চিত্র রয়েছে। যাহোক আমাদের সূর্যের বা সৌর জগতের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী নক্ষত্র হলো প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই। আমরা এই মুহুর্তে আমাদের প্রতিবেশী অন্যান্য নক্ষত্রদের আলোচনায় যাচ্ছি না। আমরা আলোচনা করবো আমাদের সূর্যের সবচেয়ে নিকটবর্তী নক্ষত্র প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই নিয়ে এবং আশা করছি এর দ্বারা আমরা মহাবিশ্বের বিশালতাকে নিরুপণের চেষ্টা তথা মহান আল্লাহর বিশালতার ব্যাপারে ধাপে ধাপে জ্ঞান অর্জনের একটি স্থর হিসেবে উপলব্দী করতে পারবো ইনশাল্লাহ।

আমাদের সূর্যের সবচেয়ে নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই পৃথিবী থেকে ৪.২ খরমযঃ ণবধৎং বা ৪.২ আলোকবর্ষ বা ৩৯লক্ষ ৭৭হাজার ৪০০কোটি কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে। আমরা রাতের আকাশে কোটি কোটি নক্ষত্রকে তারা হিসেবে দেখি। দেখে মনে হয় তারাগুলো সব গিজ গিজ করছে। অথচ এক নক্ষত্র হতে আরেকটি নক্ষত্রের মধ্যে রয়েছে গড়ে ৪আলোক বর্ষ বা ৩৮০হাজার কোটি কিলোমিটারের মতো একটি অকল্পনিয় সু-নিরাপদ দূরত্ব। আল্লাহু আকবার! এবার চিন্তা করুন আমরা রাতের আকাশে হাজার হাজার তারাকে দেখে ফেলি এক পলকেই! তার মানে আমরা এই মহা বিশে^র কত বিশাল জায়গাকে দেখে ফেলি চোখের পলকেই। তাহলে ভাবুন মহাবিশ্বেও আয়তন কেমন হতে পারে। আরো অনেক অবাক করা বিষয় হচ্ছে রাতের আকাশে আমরা চোখের পলকে মহাবিশে^র যে বিশাল এলাকা দেখতে পাই তা মহা বিশে^র তুলনায় বালিকণা পরিমাণও নয়। আমরা পর্যায়ক্রমে টহরাবৎংব বা এই মহাবিশে^র আরো অনেক দূরে অনেক গভীরে যাবো। চেষ্টা করবো মহান আল্লাহর ক্ষমতা, কুদরত ও বিশালতাকে আমাদের ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে যতটা সম্ভব ধারণ করার। আমরা চিত্রে আমাদের লোকাল নেইবারহুড বা প্রতিবেশী নক্ষত্রদের দেখতে পাচ্ছি। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে মহাবিশ্বের এই লোকালনেইবার হুড জোনের আয়তন কত হতে পারে? আগেই বলেছি প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই পৃথিবী থেকে ৯৩৩হাজার কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এই পর্যন্ত যত মহাকাশ যান আবিষ্কৃত হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গতি সম্পন্ন মহাকাশ যানের নাম হচ্ছে পার্কার সোলার প্রোব। ১৯৬৯সালে এ্যাপোলো-১১ নামের যে রকেটে চড়ে চাঁেদ ভ্রমণ করা হয়েছিল সেই রকেটের স্পিড ছিলো সেকেন্ডে ১২ কিলোমিটার। আর বর্তমানের সবচেয়ে গতি সম্পন্ন মহাকাশ যান পার্কার সোলার প্রোব এর গতি হচ্ছে সেকেন্ডে ৪১১৫কিলোমিটারের চাইতেও একটু বেশি। পার্কার সোলার প্রোবকে তৈরি করা হয়েছে সূর্যের আরো অনেক নিকটে গিয়ে সূর্যকে আরো বিশদ ভাবে জানার জন্য।

বিগত ২০১৮সালের ১২ই আগস্ট পার্কার সোলার প্রোবকে সূর্যের কাছে পাঠানো হয়েছে সূর্যের আরো অনেক নিকটবর্তী হয়ে তাকে আরো বিশদভাবে স্টাডি করার জন্য। এবার যদি সেই পার্কার সোলার প্রোবে করে আমার প্রক্সিমা সেঞ্চুরীতে যেতে চাই তবে কত সময় লাগতে পারে? পার্কার সোলার প্রোব এর গতি সেকেন্ডে ১৯২.২ কিলোমিটার এবং মিনিটে ১১,৫৩২কিলোমিটার এবং ঘন্টায় ৬,৯১,৯২০কিলোমিটার। সুতরাং পার্কার সোলার প্রোব একদিনে পাড়ি দিবে ৬,৯১,৯২০ কিলোমিটার গুণ ২৪ সমান ১কোটি ৬৬লক্ষ ৬হাজার ৮০কিলোমিটার। আর এক বছরে? এক বছরে যাবে ৬০৬কোটি ১২লক্ষ ১৯হাজার ২০০ কিলোমিটার। যেহেতু প্রক্সিমা সেঞ্চুরী আমাদের কাছ থেকে ৩৯৯হাজার কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে সেহেতু সেকেন্ডে ১৯২.২কিলোমিটার গতিতে গেলেও পার্কার সোলার প্রোব নামক মহাকাশ যানের প্রক্সিমা সেঞ্চুরাইতে পৌছুতে সময় লাগবে ৬৫৮২.৮৩ বা প্রায় ৬৫৮৩বছর। আর এ্যাপোলো ইলেভেন নামক যে রকেটে করে ১৬৬৯সালে চাদে ভ্রমণ করা হয়েছিল তার গতি ছিল সেকেন্ড ১২কিলোমিটার। সেটিতে করে প্রক্সিমা সেঞ্চুরাইতে যেতে সময় লাগবে ১লক্ষ সাড়ে ৬হাজার বছর! আল্লাহু আকবার! যদি আমাদের নক্ষত্রের সবচেয়ে নিকটবর্তী নক্ষত্রের দূরত্বের এই অবস্থা হয়, যদি সেকেন্ডে ১২কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েও প্রতিবেশী নক্ষত্রের কাছে যেতে আমাদের ১লক্ষ সাড়ে ছয় হাজার বছর সময় লাগে তবে দূরবর্তী নক্ষত্রদের দূরত্ব কেমন হবে? যা হোক এই প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই মূলত আলফা সেঞ্চুরাই নক্ষত্রমন্ডলের ৩য় সদস্য। এই নক্ষত্রমন্ডলের ১ম সদস্য হলো আলফা সেঞ্চুরাই ‘এ’ এবং ২য় সদস্য আলফা সেঞ্চুরাই ‘বি’। আলফা সেঞ্চুরাই ‘এ’ আমাদের সূর্যের চাইতে কিছুটা বড় এবং আলফা সেঞ্চুরাই ‘বি’ কিছুটা ছোট কিন্তু প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই আমাদের সূর্যের চাইতে প্রায় ৭গুণ ছোট। এটি সূর্যের সবচেয়ে নিকটবর্তী নক্ষত্র হওয়া স্বত্বেও আমরা এক খালি চোখে দেখতে পাবো না কারণ এটি খুবই লো-লুমিনাস বা খুব কম উজ্জ্বলতার একটি লাল বামন নক্ষত্র যার কারণে খুব কাছে থাকার পরও প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই আমাদের চোখের আড়ালে থেকে যায়। প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই আমাদের সূর্যের উজ্জ্বলতার মাত্র ১৫পারসেন্ট। বা আমাদের সূর্য প্রক্সিমা সেঞ্চুরাইয়ের চাইতেও ৮৫গুণ উজ্জ্বল। প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই এর একটি প্লানেট বা গ্রহ রয়েছে, তার নাম প্রক্সিমা-বি।

প্রক্সিমা-বি আমাদের পৃথিবীর হিসেবে মাত্র ১১দিনে একবার তার নক্ষত্র প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই এর চতুর্দিকে ঘুরে আসে। অর্থ্যাৎ আমাদের পৃথিবীর মাত্র ১১দিনে প্রক্সীমা-বি এর এক বছর। আর প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই এর বয়সও আমাদের সূর্যের বয়সের কাছাকাছি। তাহলে আপনিই ভেবে বলুন, যদি আমাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী নক্ষত্রটির দূরত্বই হয় ৪.২ আলোকবর্ষ তাহলে এই পুরো লোকাল নেইবারহুডের আয়তন কেমন হতে পারে। আমাদের সূর্যের বয়স ৫০০ কোটি বছর এবং প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই এর বয়স ৪৮০ কোটি বছর। এরপরে আমাদের সূর্যের নিকটতম নক্ষত্রগুলো হলো এপসিলন এরিদানি, ওলফ্ ৩৫৯, সিরিয়াস, বারনাড্্স স্টার, তাউচেটি, এলটায়ার, গিøয়েস ৮৭৮, গিøয়েস ৫৮১, গিøয়েস ১২১৪, গিøয়েস ৮৪৯, ফরমাল হট, রাসাল এগুই, আলটায়ার, রোজ- ১২৮, ৬১ভার্জিনিস সহ আমাদের সূর্যের আরো আশেপাশের আরো অন্যান্য প্রতিবেশীরা। আমরা মহাবিশ্বের আয়তনের ধারণা নেওয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত মাত্র লোকাল নেইবারহুড সম্পর্কে জানলাম। এক কথায় বলতে লোকাল নাইবারহুড মাহবিশ্বের তুলনায় সরিষাদানা পরিমাণও নয়। লোকাল নেইবারহুডের বাইরে রয়েছে আরো অনন্ত মহাবিশ্ব। মহাবিশ্বের আয়তন কত এই প্রশ্নের উত্তর জানতে এবার আমরা জানবো লোকাল নেইবারহুডের পরের বৃহত্তম মহাজাগতিক বস্তু সংগঠন গ্যালাক্সীর বৈশিষ্ট্য ও আয়তন সম্পর্কে।

মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সী

এই তো গেল আমাদের প্রতিবেশী নক্ষত্রদের ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। এবারে জানবো নক্ষত্রদের বিশাল এক সংগঠনের কথা। যে নক্ষত্র পুঞ্জতে আমাদের সূর্যের বা আমাদের পুরো সৌরজগত সহ আমাদের লোকাল নেইবারহুড সহ আরো লক্ষ লক্ষ নেইবারহুড স্টার বা তারকা প্রতিবেশী সংঘঠনের বসবাস তার নাম মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সী। মহাকাশে নক্ষত্ররা মূলত সংঘবদ্ধ ভাবে চাকতির আকারে এক জায়গায় অনেক নক্ষত্র দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে এবং ছায়াপথের কেন্দ্রের চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। আমাদের হোমস্টার বা সূর্য যে নক্ষত্র পূঞ্জে অবস্থান করছে তার নাম মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সী। মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সী অনেকগুলো বক্রারের বাহু বিশিষ্ট হওয়ায় একে স্পাইরাল গ্যালাক্সী বা সর্পিল ছায়াপথও বলা হয়ে থাকে। মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীর প্রকেত্যটি বাহুতে রয়েছে মিলিয়ন মিলিয়ন নক্ষত্র। আসুন জেনে নিই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সীর কতগুলো বাহুরনাম যেগুলোকে মহাকাশ বিজ্ঞানীরাই নাম করণ করেছেন। মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীর একদম বাইরের দিকের বাহু বা আর্মগুলো হলো- স্কাটাম সেঞ্চুরাইস আর্ম, আছে আউটার আর্ম, নিউ আউটার আর্ম, আর ভেতরের দিকে রয়েছে প্রিসিয়াস আর্ম, কারিনা স্যাগিটারিয়াস আর্ম, নরমা আর্ম, নিয়ার কেপিসি আর্ম এবং সর্বশেষ যে বাহুতে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী, আমাদের হোম স্টার সূর্য, আমাদের সৌরজগৎ, সূর্যের প্রতিবেশী নক্ষত্র সহ রাতের আকাশে আমরা যে কোটি কোটি নক্ষত্রকে দেখি সেই সবগুলো নক্ষত্রের বাস যে বাহুতে সেই বাহু হলো অরিয়ন সিগনাস আর্ম। অন্যান্য প্রধান বাহু গুলো থেকে বিচ্ছিন্ন ছোট এই খন্ডাকৃতির আমাদের আবাসস্থল বাহুতেই রয়েছে প্রায় আশি কোটি নক্ষত্র এবং এই অরিয়ন সিগনাস বাহুর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০হাজার আলোকবর্ষ এবং প্রস্থ প্রায় ৩.৫হাজার আলোকবর্ষ। আর এক আলোকবর্ষ সমান প্রায় ৯লক্ষ ৪৭হাজার কোটি কিলোমিটার। প্রিয় দর্শক এই মুহুর্তে আমরা নাসা প্রদত্ত মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীর চিত্রে দেখে আসার চেষ্টা করবো মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীতে আমাদের অবস্থান কোথায় সেটা। আর তাই আমরা এবার ডুব দেব অরিয়ন সিগন্যাস আর্ম এর আরো গভীরে। প্রিয় দর্শক আমরা যতই গভীরে যাচ্ছি ততই যেন উৎকণ্ঠা এবং উদ্বেগ বাড়ছে। এখানে নীল অক্ষরে লেখা আছে সোলার সিস্টেম অর্থ্যাৎ আমাদের সৌরজগত এবং একটি ক্ষুদ্র বিন্দু চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। হ্যা আমরা আমাদের অবস্থান পেয়ে গেছি। এই হলুদ ক্ষুদ্র সরিষা দানার মত বিন্দুটির মধ্যেই রয়েছে হলো ২৮৭কোটি কিলোমিটার ব্যস সম্পন্ন আমাদের সৌরজগত এবং এই ক্ষুদ্র হলুদ বিন্দুতে আরো রয়েছে ৩.২আলোকবর্ষ কিলোমিটার ব্যস সম্পন্ন ওর্ট ক্লাউড যার আলোচনা আমরা একটু আগেই করেছি। ছোবাহানাল্লাহ! এ বলার মতো নয়! একল্পনা করার মতো নয়! আল্লাহ তায়ালা কত বড়? সত্যিই কি ধারণা করার কোন ক্ষমতা আমাদের আছে? প্রিয় ভাই ও বোনেরা এর একটু পাশেই দেখতে পাচ্ছি চিহ্নিত করা হয়েছে অরিয়ন নেবুলাকে। মনে হচ্ছে এই তো কাছেই, যেন বাড়ির পাশের বাগানে। কিন্তু জানেন এই অরিয়ন নক্ষত্র মন্ডল আমাদের পৃথিবী হতে একহাজার তিনশত চুয়াল্লিশ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে! দেখুন এই ক্ষুদ্র দুরত্বটি কি রকম অকল্পনীয়! আর এই অকল্পনীয় দূরত্ব মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীর কাছে যেন কিছুই নয়। আল্লাহু আকবার! সত্যিই মহান আল্লাহ তায়ালার এই সৃষ্টি জগত কত বিশাল!  কখনো একবারো ভেবে দেখেছেন কি আকাশে গিজগিজ করা এই হাজার কোটি নক্ষত্র গুলো যেন কি এক সুশৃঙ্খল নিয়ম দ্বারা যেন একান্ত বাধ্য হয়েই তাদের লাইফ সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে? কোথাও কোন সংঘর্ষ নেই, নেই কোন বিশৃঙ্খলা, রাতের আকাশে দেখে মনে হয় এই হাজার হাজার কোটি নক্ষত্র গুলো যেন এক অপরের ভেতর গুলিয়ে গিয়ে, মিশ্রিত হয়ে যেন আবার আবার আলাদা হয়ে যাচ্ছে। একটি গ্যালাক্সীতে নক্ষত্ররাশিরা কতটা ঘন অবস্থায় থাকে এটা জানতে মহাকাশ সংস্থা নাসা হাবল টেলিস্কোপ দ্বারা আমাদের প্রতিবেশী গ্যালাক্সী এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সীর একটি গিগাপিক্সেল ইমেজ ধারণ করেছে। আপনারা হয়ত ভাবছেন, মেগাপিক্সেল ছবির কথাই এতদিন আমরা শুনেছি এসেছি গিগাপিক্সেল ছবি কোথা থেকে এলো? গিগাপিক্সেল লেন্সের এত উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা তো এখনো এখনো বাজারে আসেনি। হ্যা আপনার ধারণা সঠিক তবে এটি কোন সাধারণ ক্যামেরা বা টেলিস্কোপের ছবি নয়। বর্তমান বিশে^র সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির হাবল স্পেস টেলিস্কোপ দ্বারা আমাদের চাইতে ২৬লক্ষ ৫০হাজার ৬০০আলোকবর্ষ দূবে অবস্থিত এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সীর একটি ছবি। এবার সেই ইমেজটিকে আমরা জুম করে দেখবো। যেটিকে জুম করলে দেখা যায় কত বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্র এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সীতে রয়েছে। এই ছবিটি ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ওয়েব সাইটে আপলোড করা হয়েছে শুধুমাত্র এই একটি ছবির সাইজই সাড়ে চার জিবির মতো। যদি আমরা গ্যালাক্সীর আরে গভীরে গিয়ে দেখি যেন আমরা একটি নক্ষত্রের সৈকতে চোখ বুলিয়ে দেখছি। সমুদ্রতটে যেমন বিলিয়ন বিলিয়ন বালুকারাশি থাকে গ্যালাক্সীতেও নক্ষত্ররা যেন ঠিক সেই বালূকা রাশির মতোই। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জমাট বদ্ধ কণাগুলোই আমাদের সূর্যের মতো এক একটি নক্ষত্র। কিছু কিছু নক্ষত্র তো আমাদের সূর্যের চাইতেও হাজার গূণ বড়। কিন্তু মানবজাতী অনেক ধৈর্য্য ধরে অনেক গবেষণা করে জানতে পেরেছে প্রত্যেকটি নক্ষত্রের মধ্যে রয়েছে গড়ে চার আলোক বর্ষের মতো এক কল্পনাতীত সূদুর নিরাপদ দূরত্ব। আর মহাকাশে যা কিছু ঘটছে তা যেন কোন এক অসীম শক্তি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে না হলে তাদের মধ্যে এই সুন্দর সূশৃঙ্খল সহাবস্থানের ব্যাখ্যা কি? কেউ একজন যদি এদের কে নিয়ন্ত্রণ না-ই করতেন তাহলে সবকিছুর মধ্যে এক ব্যাপক সংঘর্ষে তো সবার মধ্যে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চলার কথা। সেটা কেন হচ্ছে না। তাতে কি স্পষ্ট উপলব্ধি হয় না যে কেউ একজন এদরে সবাই কে রক্ষণাবেক্ষণ বা পরিচালনা করছেন? আর যিনি করছেন তিনি তো মানব জাতী এসব বিষয় জানার বহু পূর্বেই মানুষদের কে জানিয়ে দিয়েছেন, পবিত্র কোরআনের সূরা বাক্বারার ২৫৫নং আয়াতে অর্থ্যাৎ আমাদের সবার প্রিয় আয়াতুল কুরসীর শেষাংশে সেই মহান সত্ত¦া আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই বিষয়টি সু-স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন-

আর এদের রক্ষণা বেক্ষণ তাকে ক্লান্ত করে না।

 

প্রিয় দর্শক, এতক্ষণের আলোচনায় আমরা আজকের ভিডিওর মূল শিরোনাম অর্থ্যাৎ ‘মহাবিশ্বের আয়তন কত? বিজ্ঞান কি তা আবিষ্কার করতে পেরেছে? এব্যাপারে আল-কুরআন কি বলে?’ এর বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণা মূলক আলোচনায় মহাবিশ্বের আয়তন সম্পর্কে জানতে মহাবিশ্বে স্থিত মহাজাগতিক বস্তু সম্ভারের সবচেয়ে ছোট সংগঠন নক্ষত্র ও তার পরিবার বা সৌরজগত সম্পর্কে জেনেছি, এরপরে জেনেছি সৌরজগতের পরের পরবর্তী বৃহত্তম সংগঠন লোকাল নেইবারহুড স্টারস বা প্রতিবেশী নক্ষত্র সম্পর্কে এবং সবশেষে মহাবিশ্বের একক নক্ষত্রদের সবচেয়ে বড়সংগঠন গ্যালাক্সী বা ছায়পথ সম্পর্কে জেনেছি। এই সংগঠনকে স্টারসিটি বা নক্ষত্র শহর বলেও অভিহিত করা হয় এবং মহাবিশ্বের আয়তন সম্পর্কে জানতে গিয়ে আমরা জেনেছি আমাদের হোম গ্যালাক্সীর ব্যাস একলক্ষ আলোকবর্ষ এবং এখন পর্যন্ত জানামতে মহাবিশ্বে প্রায় ২ট্রিলিয়ন বা ২লাখকোটি গ্যালাক্সী বিরাজমান! সুতরাং মহবিশ্বের আয়তন সম্পর্কে জানার বাকি আছে আরো অনেক! পরবর্তী পর্বতে আমরা গ্যালাক্সীদের ক্ষুদ্র সংগঠন লোকাল গ্যালাটিক গ্রæপ এবং লোকাল গ্যালাটিক গ্রপের পরবর্তী বৃহত্তম সংগঠন ক্লাস্টার এবং সুপার ক্লাস্টার সহ আরো অন্যান্য বৃহত্তম সংগঠনগুলোর গুলোর ব্যাপারে ধারণা নেওয়ার মাধ্যমে এই মহাবিশ্বের আয়তন সম্পর্কে সম্যখ ধারণা নেওয়ার চেস্টা করবো ইনশা আল্লাহ! সুতরাং পরবর্তী পর্বটি হতে যাচ্ছে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং রোমাঞ্চকর। তাই মহাবিশ্বের আয়তন সম্পর্কে জানার এই যাত্রার পরবর্তী পর্ব দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে এই পর্বের এখানেই ইতি টানছি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আমাদের সবাইকে তাঁর সৃষ্টি এই বিশাল মহাজগতের অনন্য রহস্য এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে আরো বেশী তাক্ওয়া অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমিন।

More News Of This Category

আজকের সময় ও তারিখ

এখন সময়ঃ সন্ধ্যা ৭:০১

আজঃ বুধবার,

বর্ষাকাল

১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩ জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৬ জিলহজ ১৪৪৫ হিজরি


© All rights reserved © 2023 ISLAM AND LIFE
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট @ ubaidullah

You cannot copy content of this page